আর জি কর মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে টালা থানার ওসিকে গ্রেফতার করল সিবিআই, সঙ্গে একই অভিযোগে গ্রেফতার সন্দীপ রায়

আর জি কর মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে টালা থানার ওসিকে গ্রেফতার করল সিবিআই, সঙ্গে একই অভিযোগে গ্রেফতার সন্দীপ রায়

আজ  শনিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর, আর জি কর কাণ্ডের পর অতিবাহিত ৩৫তম দিন। সিবিআই তদন্তের ৩০তম দিন। আর জি করের হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের মামলা এবং আর্থিক দুর্নীতির মামলারও তদন্ত করছে সিবিআই। ধর্ষণ ও খুনের মামলায় প্রথমদিন থেকেই প্রমাণ লোপাটের গুরুতর অভিযোগ এনেছিল নির্যাতিতার বাবা-মা থেকে শুরু করে হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও।

১৮ই সেপ্টেম্বর আবার সুপ্রিম শুনানি। এই আবহে সিবিআই তদন্তে আজ নতুন মোড়। আর জি কর হাসপাতালে ৯ই আগস্ট ঘটনার পর    অপরাধ স্থলের প্রমাণ লোপাটে সাহায্য করার অভিযোগে গ্রেফতারের তালিকায় নতুন সংযোজন  দুই। সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। সন্দীপ ঘোষ আর্থিক দুর্নীতির মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়েছেন। এবার প্রমাণ লোপাট ও দেরিতে এফআইআর-এর মতো গুরুতর অভিযোগে গ্রেফতার টালা থানার ওসি। নির্যাতিতার মৃত্যুর ১৪ ঘণ্টা পর এফআইআর করা হয়। তাও এফআইআর টা করেন মৃতার বাবা। এ ছাড়া বিকেল ৪টের পর ময়না তদন্তের বিশেষ অনুমতি দিয়েছিলেন এই ওসি। অভিযোগ  ভূরি ভূরি।

খবর ছড়িয়ে পড়তেই উচ্ছ্বাস ও আনন্দে মেতে ওঠেন অবস্থানরত চিকিৎসকেরা। তাঁরা বললেন প্রমাণ লোপাট যে হয়েছে তা যে সত্য আজ প্রমাণিত। অনেকেরই আনন্দে চোখে জল। সিবিআইয়ের তদন্তে খূশী। ভারতের সর্বচ্চ তদন্তকারী সংস্থাও চাইছে দ্রুত তদন্তের কিনারা করতে।

স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার পদত্যাগের দাবিতে আজ টানা পঞ্চমদিন স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আন্দোলনে জুনিয়র চিকিৎসকেরা। স্বাস্থ্যভবন জঞ্জালমুক্ত না করতে পারলে তিলোত্তমার বিচার হবে না। স্বাস্থ্যভবন এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। টানা বৃষ্টির মধ্যে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আজও ধর্নায় বসে তাঁরা। স্বাস্থ্য ভবনকে দুর্নীতির কবল থেকে মুক্ত করার দৃঢ় অঙ্গিকার। এছাড়াও আরও ৪টে দাবি নিয়েও জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান।

তাঁদের এই নির্মল অঙ্গীকারে সামিল সারা কোলকাতা বাসী, রাজ্যবাসী ও সমগ্র দেশবাসী। এমনকি ভারতের বাইরের দেশের জন সমর্থন পেয়েছে তাঁদের এই আন্দোলন। টানা বৃষ্টির মধ্যে মাথা ঢাকার আশ্রয় স্থল বলতে কিছু প্লাস্টিক চাদর। কার্যত পরনে ভিজে জামা কাপড়। তাদের এই ত্যাগ আপনি যদি চাক্ষুষ দেখেন আপনার চোখ অশ্রুসিক্ত কোটে বাধ্য। এই ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েরা ঘর বাড়ী ছেড়ে ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানরত।

শনিবার বিকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রথমবার স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তারদের মঞ্চে তাদের সাথে দেখা করতে আসেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। ডাক্তাররাও তার সঙ্গে যে আলোচনা করতে প্রস্তুত তার কথাও বলেন। সেই মতো মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের তার কালীঘাটের বাড়ীতে সন্ধ্যা ৬টার সময় আসতে বলেন। জুনিয়র ডাক্তাররাও পৌঁছলেন। কিন্তু আবার ভেস্তে গেলো মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক। লাইভ স্ট্রিম বা সরাসরি সম্প্রচার নিয়ে বাধা থাকলেও  জুনিয়র ডাক্তাররা একটু সময় নিচ্ছিলেন তাঁদের মতামত জানাতে। ডাক্তারদের তরফে একটু দেরি হয়েছিলো ঠিকই কিন্তু যখন সেই দাবি থেকে সরে আসেন তখন আর সময় না থাকায় বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী।

ফিরে যাবার সময় কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের বাইরে তাঁরা সাংবাদিকদের বলেন, “ আমরা  হতাশ।”  অনেকেই অশ্রুসিক্ত চোখে আবার ফিরে যান স্বাস্থ্য ভবনের সামনে তাঁদের ধর্নামঞ্চে।

Comments (0)

Leave a comment

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *