সপ্তাহান্তে ৩ দিনের ছুটিতে রাঁচি ভ্রমনঃ ( ২য় পর্ব )

আজ ৯ই মার্চ, সকালে বেশ ঠাণ্ডা। আমাদের হোটেল ছাড়তে হবে সকাল ৬.৩০এ। সময় মতো হোটেল ছেড়ে , চা খেয়ে তৈরি। আজ আমাদের গন্তব্য পাত্রাতু ভ্যালি ও পাত্রাতু জলাধার সেরে সোজা নেতারহাট। সেখানেই আমাদের রাতে বিশ্রাম। সকাল ৭ টায় বেরোবার কথা ছিল । সেই মতো গাড়িও চলে এসেছে । আমরা রওনা দিলাম পাত্রাতু ভ্যালি ও পাত্রাতু জলাধারের উদ্দেশ্যে। কি ভাবে যে  সময় ১ঘন্টা কেটে গেল বোঝার আগেই এসে গেল পাত্রাতু ভ্যালি । আঁকাবাঁকা পথে মোড়া। সুন্দর দৃশ্য যেন মনে হবে সিকিমের জুলুক। এখান থেকেই  পাত্রাতু জলাধারটির বার্ডস আই ভিউ দেখতে পাবেন। কিছুক্ষণ  সময় কাটিয়ে এবার রওনা  দিলাম পাত্রাতু জলাধারের উদ্দেশ্যে। যেহেতু, এটি খোলে ১০ টায় তাই এখানকার কাছাকাছি একটি  হোটেলে জল্খাবার সেরে নিয়ে ছিলাম। ১০ টার আগেই পৌঁছে গেলাম পাত্রাতু জলাধারে।

ঠিক দশটায় খুলল ।  এটির ভেতরে আছে একটি সুসজ্জিত পার্ক ও বিভিন্ন রাইড। বাচ্চা থেকে বড়  সবারই ভাল লাগবে। স্পিড বোট, ক্রুজ বোট, শিকারা ও প্যাডেল বোটও রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি  সংস্থা দুরকমই আছে। প্রতি রাইডের এন্ট্রি ফি জনপ্রতি আলাদা। জলাধারের মাঝে একটি কৃত্রিম দ্বি রয়েছে।আপনি কৃত্রিম দ্বীপে যেতে পারেন অথবা জলাধারের মাঝেও ভ্রমণ করতে পারেন। দ্বিপটি বেশ সুন্দর ও পরিষ্কার। আমরা হাইস্পিড বোট ভাড়া করেছিলাম । এটিতে সাধারন স্পিড বোট থেকে ৫০০ টাকা বেশী পড়ে। বেশ মজাদার। আমরা ৫০ মিনিটের মতো  দ্বিপটিতে ছিলাম । আনন্দ উপভোগ করে চা খেয়ে আমরা যখন ফিরে এলাম তখন বাজে দুপুর ১২ টা ।  এর পরের গন্তব্য যেহেতু নেতারহাট,  তাড়াতাড়ি বেরতে হবে। যেতে সময় লাগবে প্রায় ৪ থেকে ৪.৩০ ঘণ্টা। এবং এর মধ্যেই সেরে নিতে হবে দুপুরের খাবার। বেরিয়ে পরলাম নেতারহাটের উদ্দেশ্যে। রাস্তায় যাবার পথেই রিং রোডে পড়বে এম এস ধোনীর বাড়ি। বিশাল এলাকা জুড়ে ।  একটু দাড়িয়েই আবার চলতে শুরু করলাম। দুপুর ২.৩০ নাগাদ রাস্তার পাশের একটি ধাবায় লাঞ্চ সেরে নিয়ে আবার চলা শুরু।

নেতারহাটের পাহাড়ি  আঁকাবাঁকা রাস্তা , কখনও  কখনও লড়ির লম্বা লাইন । কিন্তু তার পরেই  সুন্দর পাইনের অরণ্য ও নিস্তব্ধ পরিবেশ আপনাকে মনমুগ্ধ করবেই। নেতারহাটে আমাদের হোটেল বুকিং ছিল তাই আমরা আগেই চলে যাই সান্ সেট পয়েন্টে। ঠাণ্ডা খুব তার ওপর শীতল হাওয়া।  কাঁপুনি লাগছে এতই ঠাণ্ডা। সূর্যাস্ত সন্ধ্যে ৬.০০ টায়। সে এক অকল্পনিও দ্শ্য। চাক্ষুষ না দেখলে বর্ণনা করা যাবে না।  সূর্যাস্ত হয়ে গেল এবার নেতারহাটের হোটেলে ফেরার পালা। হোটেলটি বেশ ভালই। ২৪ ঘণ্টা গিজার ও জল।

পরিষ্কার বিছানা । সবাই ক্ষুধার্ত এবং ক্লান্ত। কিছুক্ষণের  মধ্যেই  চা এসে গেল। ঠাণ্ডার মধ্যে গরম চা বেশ  উপভোগ্য। হোটেলর নিজস্য রেস্তরাঁ তেই রাতের খাবারের অর্ডার দিয়ে দিলাম। বাইরে অন্ধকার  কিছু দেখার সুযোগ নেই। তাড়া তাড়ি রাতের খাবার খেয়ে  শুতে হবে কারন ভোর ৫.০০ টায় সূর্যোদয়।

সূর্যোদয় দেখার জায়গা খুব কাছেই। আপনি হেটে অথবা নিজের গাাড়ীতেও যেতে পারেন। ঘড়িতে রাত ৯.০০ টা।  রাতের খাবার খেয়ে নিলাম। এখানে আপনি আমিষ বা নিরামিষ  খাবারের ইচ্ছা মতো অর্ডার করতে পারেন। খাবারের দাম ও মান ঠিকই আছে ।

এবার সুন্দর দিনটির কথা স্মৃৃতিতে রোমন্থন করতে করতে শুতে যাবার পালা । সবাই ভাল থাকুন । আবার দেখা হবে ৩য় পর্বে । শুভরাত্রি।

Click to view gallery images

Click to view Day 1

Click to view Day 3

Comments (0)

Leave a comment

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *